Proposed budget seems to be a challenging one: BCI
— June 13, 2022Anwar-ul Alam Chowdhury (Parvez), President of Bangladesh Chamber of industries (BCI) said that the proposed budget seems to be challenging…
পেশা জীবনের ৩৫ বছরের মধ্যে ৩০ বছরই কেটেছে সোনালী ব্যাংকে। তাই রাষ্ট্রায়ত্ত এ প্রতিষ্ঠানের দুবর্লতাগুলো ভালোই জানা আছে তার। ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্ব পেয়ে তাই সেগুলো ধরে ধরে সমাধানের পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ই ব্যক্ত করলেন প্রদীপ কুমার দত্ত।
রোববার দেশের বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত এ ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পাওয়ার পর সোমবারই তার মুখোমুখি হয় । এ সময় নিজের পরিকল্পনার কথা জানান প্রদীপ কুমার।
সবচেয়ে বেশি মানুষকে ব্যাংকিং সেবা দানের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হয়েও দায়িত্ব পালনকারী এ ব্যাংকের নতুন এমডি জানান, সেবার মান বৃদ্ধি সঙ্গে ব্যাংকের স্বচ্ছতাও নিশ্চিত করতে চান তিনি। একই সঙ্গে ব্যাংক কর্মীদের সরকারি কর্মকর্তার মনোভাব পরিহার করে গ্রাহকদের সেবার মনোভাব গড়ে তোলার আহবান জানান।
এছাড়া সাম্প্রতিক অর্থনীতি আর কৃষি ব্যবস্থাপনাসহ ব্যাংকিং খাতের আরো অনেক খুঁটিনাটি উঠে আসে তার আলাপচারিতায়। নিম্নে তা তুলে ধরা হলো:
**দেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী আপনি। সোনালী ব্যাংক নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কি?
প্রদীপ কুমার: দেখুন, আমি সোনালী ব্যাংকের মানুষ। আমার ব্যাংকিং পেশা শুরু হয় সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে। ১৯৭৭ সালে আমি প্রবিশনারি অফিসার হিসেবে পেশা জীবন শুরু করি এ ব্যাংকে। আমার পেশা জীবনের ৩৫ বছরের মধ্যে ৩০ বছর কেটেছে এ ব্যাংকে। তাই এর প্রতিটি বিষয় আমার জানা। আমি এর শক্তি যেমন জানি, তেমনি জানি দুবর্লতাগুলোও। সেগুলো ধরে ধরে কাজ করবো। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের উদ্যোগ নেবো। আশা করি আমার সহকর্মীরা আমাকে সহযোগিতা করবেন।
**রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর সেবার মান নিয়ে অসন্তুষ্টি রয়েছে। আপনি কিভাবে কাজ করবেন।
প্রদীপ কুমার: ভালো কথা বলেছেন। তবে সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা গ্রাহক সবাই আমার চেনা। আমার প্রথম কাজ হবে, ব্যাংকের সেবার মান বাড়ানো। সাথে সাথে এর স্বচ্ছতা, সততা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। এজন্য যেসব বিষয়কে অগ্রাধিকার দিতে হয় সেগুলো চিন্তা করছি। আশা করছি সেবার মান অতীতের চেয়ে আরো ভালো অবস্থানে নিতে পারব।
**রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ও পরিচালনা ব্যয় বেশি। এ বিষয়ে আপনি কি উদ্যোগ নেবেন?
প্রদীপ কুমার: এটা ঠিক। তবে আমি এখনো সব জানতে পারিনি। ব্যাংকের আর্থিক তথ্যাদি জেনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী সব কাজ করব। শ্রেণীকৃত ঋণ কিভাবে কমানো যায়, আমানত আরো বাড়ানো সবই আমার কাছে গুরুত্ব পাবে। তাছাড়া এ ব্যাপারে তো বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) রয়েছে।
**কৃষি ঋণ নিয়ে আপনার ভাবনার কথা বলুন।
প্রদীপ কুমার: কৃষি বাংলাদেশের প্রাণ। কৃষি নির্ভর এই দেশ। এ খাতের গুরুত্ব আমার কাছে অনেক বেশি। আপনি তো জানেন, আমি সর্বশেষ রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলাম। রাকাবে আমি যোগ দেই ২০১০ সালের ১৮ জুলাই। রাকাবের প্রধান নির্বাহী হিসেবে আমার এ খাত নিয়ে কাজ করার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। সে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে কৃষি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ঋণ কিভাবে বেগবান করা যায় তা আমার জানা।
**ব্যাংকের কর্মীদের জন্য কি পরিকল্পনা আছে আপনরা?
প্রদীপ কুমার: এটা তো কেউ অস্বীকার করবে না, কর্মীরাই ব্যাংকটি চালাবে। তাই তাদের কিভাবে উজ্জীবীত করা যায় তা আমার বিবেচনাতে থাকবে। তবে কর্মীদের মনোভাবের পরিবর্তন আনতে হবে। তাদের সরকারি কর্মকর্তার মনোভাব পরিহার করে গ্রাহকদের সেবার মনোভাব গড়ে তুলতে হবে। আর তাদের কল্যাণের জন্য যা করা দরকার তা আমি করব।
**বিদায়ী অর্থবছরে সরকারের ব্যাংক ঋণের একটি চাপ ছিলো। আগামী বছরও তা অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করছেন অর্থনীতিবিদরা। বড় ব্যাংক হিসেবে এর বড় চাপ পড়ে সোনালী ব্যাংকের উপরে। এ ব্যাপারে কি বলবেন।
প্রদীপ কুমার: দেখুন, মাথা বড় থাকলে ঝড় বেশি লাগবে। সরকারকে সহায়তা করতে হবে। এটা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক হিসেবে দায়িত্ব। তবে এটি যাতে সহনীয় থাকে তা খেয়াল রাখব।
প্রদীপ কুমার দত্তের জীবনবৃত্তান্ত
জন্ম ১৯৫৩ সালের ২৬ নভেম্বর ময়মনসিংহে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত রসায়ন বিভাগের স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় ১৯৭৪ সালে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন তিনি। তারপর সোনালী ব্যাংকে পেশাজীবন শুরু। ২০০৩ সালে মহাব্যবস্থাপক হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে যোগ দেন। ২০০৫ সালে ফিরে আসেন সোনালী ব্যাংকে। ২০০৮ সালে সোনালী ব্যাংকের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পান। দুই বছর দায়িত্ব পালন শেষে ২০১০ সালে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর পদে যোগ দেন। সবশেষ গত ১৭ জুন সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব পান।