Bangabandhu conferred ‘FOSWAL Literature Award’ for his trilogy
— March 26, 2023RN Desk: The Foundation of SAARC Writers and Literature (FOSWAL) on Sunday conferred “Special Literary Award” to Bangladesh’s Father of…
ছেলেটির নাম আলম । বয়স মাত্র ১২ বছর । কালো চেহারা । মাথায় ঘন চুল । তখন সে ক্লাস এইটে পড়ে । সে যুদ্ধের সময় ভারতে পালিয়ে আসে । ভর্তি হয় মুক্তিবাহিনীতে । প্রথম প্রথম আলমকে কেউ পাত্তাই দিল না । কিন্তু যখন আলম দেশ রক্ষা করার জন্য শপথ করল তখন সবাই অবাক হয়ে গেল । সে স্টেনগান ও জি থ্রি চালানোতে পারদর্শী হয়ে উঠল । আলম কিছু দিন বর্ডারে সম্মুখ ও গেরিলা যুদ্ধের নিয়ম কানুন শিখল । তারপর সে দলের সাথে দেশের ভিতর চলে গেলো । তার দলের কমান্ডারের নাম আতাউর । দলের সৈন্য সংখ্যা ২১ জন । সঙ্গে আছে ১২০০ রাউন্ড গুলি । দলনেতা সকল সেনাকে বলল , আমরা আপাতত কোন বড় অপারেশন করব না । শুধু মাঝে মাঝে পাকিস্তানি আর্মি ক্যাম্পে হ্যারেসিং ফায়ার করব । যদি কোন ভালা টার্গেট পাই তাহলে বড় অপারেশন করব । তারা এক গ্রামে বেশিদিন থাকত না । তারা বিভিন্ন পাকিস্তানি ক্যাম্পে হ্যারেসিং ফায়ার করত ।
কমান্ডার একদিন বলল , কোন একটা স্পেশাল অপারেশন করতে হবে ।
আলম বলল , কমান্ডার সাহেব স্পেশাল অপারেশনটা কি ?
কমান্ডার বলল , এখনো ভাবা হয়নি ।
আলম বলল , কমান্ডার সাহেব আপনি যদি বলেন তাহলে আমি গ্রাম থেকে খবর আনতে পারি ।
কমান্ডার রাজি হলো । আলম খবর আনতে বেড়িয়ে পড়ল ।
ঘণ্টা দুএক পর আলম ফিরে আসল । আলম কমান্ডারকে বলল , আগামীকাল পাকিস্তানিদের একটি রসদ ও অস্রবাহি একটি জাহাজ আসবে । আলম বলল , ওই জাহাজে নাকি অনেক গোলাবারুদ থাকবে । কমান্ডার তার সহযোদ্ধাদের নিয়ে রাত ২ টার দিক নদীর পাড়ে আসল । ড়ে এক নিরাপদ জায়গায় তারা বসল ।
কিছুক্ষণ তারা বিশ্রাম নিল । ভোর সাতটার মধ্যে সবার হাতমুখ ধোয়া ও গোছল করা হয়ে গেল ।
গ্রামের কিছু মানুষ তাদের জন্য খাবার নিয়ে আসল । সবাই সকালের নাস্তা করে নিল । আলম একটু গ্রাম দিয়ে ঘুরে আসল ।
কিছুক্ষণ পর আলম ফিরে আসল এবং খবর আনল , মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য গ্রামে দুই বাড়িতে রান্না হচ্ছে । কিন্তু কারো দুপুরের খাবারের প্রতি কোন আগ্রহ নেই । সবার চোখ এখন নদীর দিকে । কখন যে জাহাজ আসবে ? দুপুর ১২ টা বেজে গেলো কিন্তু জাহাজের দেখা নেই । মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য খাবার এসে পড়ল । সবাই তাড়াতাড়ি খেয়ে নিল । আলম আবার খবর আনতে গেলো । কিছুক্ষণ পর আলম আসল ও খবর আনল , জাহাজটি রাতে আসবে । সবাই দুপুর বেলা বিশ্রাম নিয়ে নিল । সন্ধ্যাবেলা আবার সবাই পজিশন নিয়ে নিল । রাত নয়টার দিক জাহাজের ভোঁ ভোঁ শব্দ শোনা গেলো । সবাই ভালভাবে পজিশন নিয়ে নিল । জাহাজটি আস্তে আস্তে কাছে আসতে লাগল । কমান্ডার ফিস ফিস করে আলমকে বলল , ফায়ার !
আলম তার স্টেনগান দিয়ে ব্রাশ ফায়ার শুরু করল । জাহাজে থাকা রাজকার ও আর্মিরাও পাল্টা গুলি চালালো । রাতভর দু পক্ষের গোলাগুলি চলল । কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছে না ।
আলম কমান্ডারকে বলল , সার আমি জাহাজে গিয়া এক্সপ্লসিভ লাগাইয়া আসি ।
কমান্ডার বলল , কিভাবে ? জাহাজের কাছে গিয়ে ছুড়ে মারতে পারবে ?
আলম বলল , জি সার পারব ।
কমান্ডার তাকে এক্সপ্লসিভ দিল । আলম সাতার কেটে জাহাজের কাছে গেল ।
পাঁচ ছয় মিনিট পর আকাশ বাতাস কাপিয়ে এক্সপ্লসিভটি ব্রাস্ট করল ।
তার ফিরে আশার আগেই বোমটি ব্রাস্ট করেছে । তার দেহটি ছিন্ন বিন্ন হয়ে গেল।
(মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গল্প )
মেহরাব হক
শ্রেণি – ষষ্ঠ