Shimanto Bank signs MoU with Kay Kraft to offer discounts on credit card purchases
— March 26, 2023RN Desk: Shimanto Bank Ltd recently signed a Memorandum of Understanding (MoU) with Kay Kraft at the bank’s head office….
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে ( বর্তমান , সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ভাষণ দেন । ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকাসহ বিভিন্ন বড় বড় শহরে আক্রমণ করে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার আগে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন । ২৫ শে মার্চ রাতে ঢাকার সাধারণ জনগণ ঢাকার চারদিকে বেরিকেট দেয় । কিন্তু পাকিস্তানিরা ডিনামাইট দিয়ে সব বেরিকেট ধ্বংস করে দেয় । পাকিস্তানি আর্মিরা সারা দেশে প্রবেশ করতে প্রচুর প্রতিরোধের সম্মুখীন হয় ।পাকিস্তানি আর্মিরা সারা দেশের সব প্রতিরোধ ভেঙে আস্তে আস্তে দেশে প্রবেশ করে ।দেশের কিছু লোক পাকিস্তানিদের পক্ষে যোগ দেয় । পাকিস্তানিরা এদের নিয়ে গড়ে তোলে রাজাকার , আলবদর , আল শামস ইত্যাদি বাহিনী । দেশের সাধারণ ছাত্র – জনতা , পুলিশ , ইপিআর , আনসার পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে অস্র তুলে ধরে । আর এই দেশপ্রেমিকদের নিয়ে গড়ে তোলা বিভিন্ন বাহিনী । যেমন – কর্নেল আতাউল গণি ওসমানীর নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী , কাদের সিদ্দিকির নেতৃত্বে কাদেরিয়া বাহিনী , এটিএম হেমায়েত উদ্দিনের নেতৃত্বে হেমায়েত বাহিনী । আরো বিভিন্ন ধরণের বাহিনী ছিল যারা পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে অস্র তুলেছিল । আমাদের এই দেশপ্রেমিকেরা সাধারণ অস্র দিয়ে আধুনিক অস্র সজ্জিত পাকিস্তানিদের সাথে যুদ্ধ করেছে ।
একদিন মুক্তিযোদ্ধারা খবর পেল পাকিস্তানিদের দুইটি নৌকা পদ্মা নদী দিয়ে যাবে । ১১ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল পদ্মা নদীর পাড়ে অবস্থান নিল । তখন পদ্মা নদীতে বেশ ভালো ঢেউ ছিল । মুক্তিযোদ্ধারা খুব ভালোভাবে সুবিধাজনক স্থানে পজিশন
নিল । কিছুক্ষণ পর পাকিস্তানিদের নৌকা দুইটি দেখা গেল্ । তখনো নৌকা দুটি অনেক দূরে ছিল । আস্তে আস্তে নৌকা দুইটি কাছে আসতে লাগল । মুক্তিযোদ্ধারা দেখল নৌকায় পাকিস্তানি আর্মিরা ছোট ছোট বাঙ্কারের মত তৈরি করেছে । সেখানে পাকিস্তানিরা এল এম জি নিয়ে পজিশন নিয়েছে । মুক্তিযোদ্ধারা আরো দেখল পাকিস্তানিদের কাছে অনেক উন্নতমানের অস্র । তাই মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করতে পারছে না । কারণ মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আছে শুধু থ্রি নট থ্রি রাইফেল ও কিছু গোলাবারুদ । তারপরও মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে যায়নি । কারণ তাদের কাছে আছে অসার্থক দেশপ্রেম । কমান্ডার তার দলকে তিন ভাগে ভাগ করল । প্রথম ভাগে তিনজন মুক্তিযোদ্ধা কাভারিং পার্টি হিসেবে থাকবে । দ্বিতীয় ভাগে ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা বাংকারের দিক লক্ষ্য করে গুলি করবে । তৃতীয় ভাগে কমান্ডার ও আরো তিন জন মুক্তিযোদ্ধা নৌকা লক্ষ্য করে গুলি ছুড়বে যাতে নৌকা ডুবে যায় । প্রায় সময় পাকিস্তানিরা পানি পথে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পরাজিত হতো । তাই এবার তারা তৈরি হয়ে এসেছে । আস্তে আস্তে পাকিস্তানিদের নৌকা দুইটি মুক্তিযোদ্ধাদের রাইফেলের নলের ডগায় এসে পড়ল । প্রথম ভাগের মুক্তিযোদ্ধাদের রাইফেল গর্জে উঠল । সাথে সাথে পাকিস্তানিরাও জবাব দিল । পাকিস্তানি আর্মিরা এল এম জি দিয়ে ব্রাশ ফায়ার শুরু করল । মুক্তিযোদ্ধারাও তাদের থ্রি নট থ্রি রাইফেল দিয়ে বৃষ্টির মতো গুলি করতে লাগল । কিছুক্ষণের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের ১১ টি রাইফেল গর্জে উঠল । নৌকার মাঝি গোলাগুলি দেখে নদীতে ঝাপ দিল । এর মধ্যে আবার নদীতে ঢেউ শুরু হলো । মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিতে পাকিস্তানিদের একটা নৌকা ফুটো হয়ে গেছে । সব বিপদ পাকিস্তানিদের জাপটে ধরল । তাই পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পণ করল এবং বলতে লাগল , ‘ জয় বাংলা জয় বাংলা । হামক ছোর দাও’ । নদীর স্রোতে পাকিস্তানিদের নৌকা অন্য দিকে চলে যেতে লাগল । একজন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের কাছে রাইফেল রেখে নদীতে ঝাপ দিল । কোন মতে সে নৌকায় উঠল । তার মাজায় একটা দড়ি বাঁধা ছিল । সেই দড়ি দিয়ে সে নৌকা দুটি বানল । সে একাই বৈঠা বাইতে লাগল । কিন্তু পাকিস্তানি বিশ্বাসঘাতকরা তাকে গুলি করে নদীতে ফেলে দিল । তারপর অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানিদের গুলি করে মারল । সেই মুক্তিযোদ্ধাটি নদীর স্রোতে কই চলে গেছে তা কেও জানেনা এক অপর ওয়ালা ছাড়া । সে আর ফিরল না ।
মেহরাব খান
শ্রেণি – ৬ষষ্ঠ
রাজারবাগ পুলিশ লাইনস স্কুল অ্যান্ড কলেজ